ল্যাপটপ কিভাবে ব্যাবহার করবেন এবং কেন?
এখন নতুন প্রজম্মের একমাত্র চাহিদাল্যাপটপ।এছাড়া বাংলাদেশের বাজারে এ সময়ের সবচেয়ে আলোচিত প্রযুক্তি পন্যের নাম ল্যাপটপ। বহনের সুবিধা থাকায় এই পন্যটি একজন প্রযুক্তি মনস্ক মানুষের জীবনযাপন অনেকটাই সহজ করে দেয়। তাই আজকাল একজন আধুনিক মানুষের একটি ল্যাপটপ না থাকলেই নয়। কয়েক বছর আগেও ল্যাপটপ ছিল সাধারনের নাগালের একেবারে বাইরে। সম্প্রতি বাংলাদেশের বাজারে কম মূল্যে বেশ কিছু ভালো ব্র্যন্ডের ল্যাপটপ এসেছে। ফলে ব্যবসায়ী এবং আইটি বিশেষজ্ঞদের গন্ডি পেরিয়ে ল্যাপটপ এখন প্রায় সবর্স্তরের মানুষের হাতের কাছেই। আর পুরো টাকা একসাথে যোগাড় না করতে পারলে রয়েছে কিস্তির ব্যবস্থা। চলুন দেখে নেয়া যাক ল্যাপটপ সম্পর্কিত এমন কিছু টিপস যেগুলো ল্যাপটপ কেনার আগে ও পরে আপনাদের কাজে লাগবে।
ল্যাপটপ কেনার আগে-
ল্যাপটপের দাম সাধারনত ডেস্কটপের চেয়ে অনেক বেশি। তাই একটু ভেবে চিন্তেই ল্যাপটপ কেনা উচিত। ল্যাপটপ কেনার আগে যেসব বিষয় ভেবে নেয়া প্রয়োজনঃ
>আপনি কি কাজে ল্যাপটপ কিনবেন সেটা একটি বড় বিষয়। আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী ল্যাপটপের কনফিগারেশন ঠিক করুন। যেমনঃ বেশি মেমোরি প্রয়োজন এমন কোন সফটওয়্যার ব্যবহার না করলে সাধারন কাজের জন্য কম বাজেটের সেলেরন প্রসেসরের ল্যাপটপ কেনাই যথেষ্ঠ। কিন্তু আপনি যদি গেম খেলা বা গ্রাফিক্সের কাজ করতে চান তাহলে উচ্চ গতি সম্পন্ন হাই কনফিগারেশনের ল্যাপটপই কেনা উচিত। কনফিগারেশন নির্ধারনের ব্যাপারে প্রসেসরের ক্লক স্পিডের দিকে বেশি লক্ষ্য রাখুন।
>ল্যাপটপ যেহেতু কিছুটা দামী পণ্য তাই এক্ষেত্রে বাজেট বড় একটি বিষয়। এছাড়া বাজারে ল্যাপটপেরর প্রায় সব ব্র্যান্ডই ভালো। তাই ব্র্যান্ডের নামের চেয়ে ল্যাপটপ কেনার আগে দেখুন সাধ্যের মধ্যে কোন মডেলের ল্যাপটপে আপনি ভালো সবচেয়ে কনফিগারেশন পাচ্ছেন।
> ল্যাপটপ কেনার আগে দেখে নেয়া দরকার এর ব্যাটারি কতটুকু সময় ব্যাকআপ দিতে পারে। আপনার যদি আউটডোরে ল্যাপটপ বেশি ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় তাহলে লক্ষ্য রাখুন ব্যাটারির ব্যাকআপ যেন একটু বেশি হয়।
> এখন অনেক জায়গাতেই স্বল্প মূল্যে ব্যবহৃত (সেকেন্ড হ্যান্ড) ল্যাপটপ পাওয়া যায়। এ ধরনের ব্যবহৃত ল্যাপটপ কেনার আগে ভালোভাবে ভাবুন। কারন, সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ বিক্রির সময় বিক্রেতারা অনেক ত্রুটির কথা চেপে যান। আর ওয়ারেন্টি না থাকায় এসব ল্যাপটপ কিনে আপনি নিশ্চিন্তে থাকতেও পারবেন না।
>ল্যাপটপের প্রধান সুবিধা হচ্ছে এটি খুব সহজেই বহন করা যায়। তাই যে ল্যাপটপ কিনবেন তার ওজন কেমন সেটা জেনে নিন। ছোট স্ক্রিনের ল্যাপটপের ওজন সাধারনত কম হয় বলে বহন করা সুবিধাজনক; এসব ল্যাপটপের দামও তূলনামূলকভাবে বেশি। তবে গ্রাফিক্সের কাজ যারা করবেন তাদের জন্য একটু বড় স্কিনের ল্যাপটপ কেনাই ভালো। তবে আউটডোরে বেশি ব্যবহারের প্রয়োজন হলে কম ওজনের ল্যাপটপ কেনাই ভালো। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কথা হলো-আপনি কেমন স্ক্রিনের ল্যাপটপ ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।
ল্যাপটপ কেনার পরে-
ল্যাপটপ কেনার পর ল্যাপটপ ব্যবহারে বেশ কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।এগুলো হলো-
>ল্যাপটপ বেশিক্ষণ কোলের উপর রেখে ব্যবহার করা উচিত নয়। বেশ কিছুদিন আগে একদল গবেষক ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের মাঝে এক জরিপ চালিয়ে দেখেছেন, যারা কোলের উপর রেখে টানা অনেকক্ষণ ল্যাপটপ ব্যবহার করেন তাদের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে।
>দাম একটু বেশি হলেও ল্যাপটপ বহনে ল্যাপটপের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করুন। এসব ব্যাগ ল্যাপটপকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া ভ্রমণে ল্যাপটপ বহন করার জন্য কাঁধে ঝুলানোর সুবিধা যুক্ত (অনেকটা স্কুল ব্যাগের মতো) ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে বহনে সুবিধার পাশাপাশি আরেকটি সুবিধা হলো বাইরে থেকে বোঝাই যাবে না যে আপনি ল্যাপটপ বহন করছেন। তাই ছিনতাইকারীর দৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
> ল্যাপটপে বিল্ট-ইন কিছু ডিভাইস আছে যেমনঃ ব্লু-টুথ, ওয়াই-ফাই, ইনফ্রারেড ইত্যাদি। প্রয়োজন না থাকলে ল্যাপটপ ব্যবহারের সময় এসব ডিভাইস বন্ধ করে রাখুন। এতে ব্যাটারির শক্তি খরচ কম হবে।
> ডিসপ্লে সেটিংস থেকে বিভিন্ন অতিরিক্ত ফিচার যেমনঃ ClearType fonts , fade effects ইত্যাদি বন্ধ করে রাখুন। ফলে শক্তি খরচ কিছুটা কম হবে।
> ল্যাপটপে গেম খেলা বা কোন কিছু টাইপ করার জন্য এক্সটার্নাল কী-বোর্ড এবং মাউস ব্যবহার করুন। কারন, এসব ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহারে ল্যাপটপের টাচ প্যাড এবং কি-বোর্ডের আয়ু কমে যাবে।
>ঘরে বা বিদ্যুত ব্যবহারের সুবিধা আছে এমন স্থানে সরাসরি বিদ্যুত ব্যবহারের মাধ্যমে ল্যাপটপ চালান। প্রত্যেকটি ল্যাপটপের ব্যাটারির একটি আয়ু আছে। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার চার্জ হবার পর এই ব্যাটারিটি নষ্ট অর্থাৎ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যায়।
>ল্যাপটপ ডেস্কটপের মতো একটানা ব্যবহার করা ঠিক নয়। বেশ কয়েক ঘন্টা ব্যবহার করার পর ল্যাপটপ কিছু সময় বন্ধ রাখা উচিত।
>ল্যাপটপের এয়ার ভেন্টটি নিয়মিত পরিষ্কার করুন। কারন এয়ার ভেন্ট বন্ধ হয়ে গেলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হবে যা ল্যাপটপের জন্য ক্ষতিকর
>খাবার ও পানীয় থেকে ল্যাপটপ দূরে রাখুন। নাহলে অসাবধানতা বশত ল্যাপটপের উপর পানি পড়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
>ল্যাপটপ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। কারন, হাত থেকে একবার পড়ে গেলেই ল্যাপটপের আয়ু শেষ!
আশা করি আমার তত্ত্ব গুল আপনাদের কাজে আসবে।
ল্যাপটপ কি ভাবে ব্যাবহার করবেন এবং কেন?
No comments:
Post a Comment